বায়ুচাপের তারতম্যের নিয়ন্ত্রকসমূহ

Submitted by avimanyu pramanik on Mon, 08/09/2021 - 08:33

বায়ুচাপের তারতম্যের নিয়ন্ত্রকসমূহ (Factors affecting atmospheric Pressure) : ভূপৃষ্ঠের সর্বত্র বায়ুর চাপ সমান হয় না । বায়ুর চাপ কতকগুলি বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল । বায়ুচাপের তারতম্যের কারণগুলি হল—

(i) ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা (Altitude) : সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যত উপরে উঠা যায় বায়ুর ওজন তত কমতে থাকে । ফলে বায়ুর চাপও কম হয় । সাধারণত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রতি ২৭০ মি. উচ্চতায় ৩৪ মিলিবার হারে বায়ুচাপ হ্রাস পায় । এজন্য দুটি ভিন্ন উচ্চতায় অবস্থিত স্থানের মধ্যে যেটির উচ্চতা বেশি সেখানে বায়ুর চাপ অপেক্ষাকৃত কম ।

(২) বায়ুর উষ্ণতা (Temperature) : উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে বায়ু প্রসারিত ও হালকা হয় । ফলে বায়ুর ওজন কমে গিয়ে বায়ুর চাপ হ্রাস পায় । উষ্ণ বায়ুর চাপ কম ও শীতল বায়ুর চাপ বেশি হয়ে থাকে । এজন্য নিরক্ষীয় অঞ্চলে উষ্ণতা বেশি বলে বায়ুর চাপ কম হয় । আবার মেরু অঞ্চলে অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে বায়ুর চাপ বেশি হয় ।

(৩) বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ (Water Vapor) : জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু শুষ্ক বায়ুর তুলনায় হালকা হয় । তাই আর্দ্র জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ুর চাপ অনেক কম হয় এবং শীতল ও শুষ্ক ভারী বায়ুর চাপ বেশি হয় । এ কারণে শীতকালের তুলনায় বর্ষাকালে বায়ুর চাপ কম হয় এবং যেসব অঞ্চলের বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে সেখানে বায়ুর চাপও কম হয় ।

(৪) পৃথিবীর আবর্তন গতি (Rotation of Earth) : পৃথিবীর আবর্তন গতির ফলে কোরিওলিস বলের সৃষ্টি হয় । এর প্রভাবে নিরক্ষীয় অঞ্চলের উষ্ণ ও হালকা বায়ু এবং দুই মেরুবৃত্ত অঞ্চলের বায়ু ক্রান্তীয় অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয় । ফলে নিরক্ষীয় ও মেরুবৃত্ত অঞ্চলে বায়ুর চাপ কম হয় এবং ক্রান্তীয় অঞ্চলে বায়ুর চাপ বৃদ্ধি পায় ।

(৫) স্থলভাগ ও জলভাগের বন্টন (Distribution of land and water) : পৃথিবীপৃষ্ঠের স্থলভাগ জলভাগের তুলনায় দ্রুত উত্তপ্ত বা শীতল হয় । তাই জলভাগ অপেক্ষা স্থলভাগ গ্রীষ্মকালে অধিক গরম এবং শীতকালে বেশ ঠান্ডা হয় । সেই কারণে গ্রীষ্মকালে স্থলভাগের ওপর বায়ুচাপ কম এবং শীতকালে বায়ুচাপ বেশি হয় । জলভাগে এর বিপরীত অবস্থা ঘটে । এইভাবে স্থলভাগ ও জলভাগের বন্টনের জন্য চাপের তারতম্য ঘটে ।

****

Comments

Related Items

কাবেরী নদী (The Kaveri)

কাবেরী নদী (The Kaveri) : কর্ণাটক রাজ্যের তালাকাভেরি উচ্চভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে কাবেরী নদী কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুর মধ্য দিয়ে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে । কাবেরী নদীর দৈর্ঘ্য ৭৬৫ কিমি.

কৃষ্ণা নদী (The Krishna)

কৃষ্ণা নদী (The Krishna) : পশ্চিমঘাট পর্বতমালার মহাবালেশ্বরের শৃঙ্গের কিছুটা উত্তরে প্রায় ১৪০০ মিটার উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হওয়ার পর কৃষ্ণা নদী দক্ষিণ-পূর্বে তেলেঙ্গানা ও অন্ধপ্রদেশ রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিশাল বদ্বীপ সৃষ্টি করে

গোদাবরী নদী (The Godavari)

গোদাবরী নদী (The Godavari) : গোদাবরী নদী 'দক্ষিণ ভারতের গঙ্গা' নামে পরিচিত । মহারাষ্ট্রের ব্রম্ভগিরি পাহাড়ের ত্র্যম্বক শৃঙ্গ থেকে উৎপন্ন হয়ে এবং পরে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে গোদাবরী নদী মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশ

মহানদী (The Mahanadi)

মহানদী (The Mahanadi) : ছত্তিসগড় রাজ্যের রায়পুর জেলার দক্ষিণাংশের সিয়াওয়া মালভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে মধ্যপ্রদেশ ও ওড়িশা রাজ্য অতিক্রম করার পর বদ্বীপ সৃষ্টি করে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে । মহানদী

তাপী নদী (The Tapti)

তাপী বা তাপ্তি নদী (The Tapti) : মধ্যপ্রদেশের মহাদেব পর্বতের মুলতাই উচ্চভূমির প্রায় ৭৭০ মিটার উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হয়ে তাপী নদী মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের ওপর দিয়ে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে সাতপুরা ও অজন্তার মধ্যবর্তী সংকীর্ণ উপত